আশিস কুমার ঘোষ, কলকাতা
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বেকারি, মিষ্টি ও নমকিন, দুগ্ধ পণ্য, আইসক্রিম এবং আতিথেয়তা শিল্পের জন্য পূর্ব ভারতের প্রিমিয়ার বিজনেস টু বিজনেস (বি ২ বি) প্রদর্শনী ২১তম আন্তর্জাতিক ফুডটেক কলকাতা ২০২৪ শুরু হবে আগামী ২৯ নভেম্বর কলকাতার বিশ্ব বাংলা মিলন মেলা কমপ্লেক্সে। শেষ হবে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন প্রদর্শনী খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে ৬টা পর্যন্ত। খাদ্য ও আতিথেয়তার ওপর ২০০টিরও বেশি প্রধান বিদেশী এবং ভারতীয় কোম্পানি ও শীর্ষ ব্র্যান্ড তিনদিন ব্যাপী মেগা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করবে, যা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ বেকারি এসোসিয়েশন, অল ইন্ডিয়া ফুড প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন, পশ্চিমবঙ্গ বেকার্স কো অর্ডিনেশন কমিটি, পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টি উদ্যোক্তা, ফ্র্যাগ্রান্স অ্যান্ড ফ্লেভার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া, ইস্টার্ন ইন্ডিয়া কুলিনারি অ্যাসোসিয়েশন এবং অন্যান্য সংস্থা দ্বারা সমর্থিত।
বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ২১তম আন্তর্জাতিক ফুডটেক ২০২৪-এর প্রধান আয়োজক জাকির হোসেন জানান, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এখন ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্র। এই ক্ষেত্র ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের মূল কেন্দ্রবিন্দু । ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং আতিথেয়তা শিল্প অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় এবং এতে নানা ধরণের পণ্য এবং উদ্ভাবন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আন্তর্জাতিক ফুডটেক কলকাতা ২০২৪ প্রদর্শনীটি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট এবং খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা বাড়তে থাকা পরিস্থিতিতে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এই প্রদর্শনীটি উন্নত খাদ্য প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়া প্রদর্শন করবে, যা সাশ্রয়, কার্যকারিতা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্মার্ট সমাধান এবং বর্জ্য হ্রাসের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। ।
তাঁর দাবি, খাদ্য এবং পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বেশ কয়েকটি সুবিধা প্রদান করে। যার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী সেলফ লাইফ, দূরবর্তী অঞ্চলে পরিবহণ, সহজ এবং উন্নত প্রবেশযোগ্যতা।
জাকির হোসেন আরও জানান যে, এই মেগা প্রদর্শনীটি আধুনিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রপাতির পরিবর্তনশীল ক্ষমতা প্রদর্শন করবে। এটা
আত্মনির্ভর ভারত অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই প্রদর্শনী এক ছাদের নিচে সেরা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি, খাদ্য উৎপাদন ও প্যাকেজিং যন্ত্রপাতি, সেরা প্রক্রিয়া এবং কার্যকলাপ, আর্থিক সহায়তা ইত্যাদি নিয়ে আসবে। এই বছর দুটি নতুন সেক্টর যুক্ত করা হয়েছে। দুধজাত পণ্য এবং আইসক্রিম। ডেয়ারি অ্যান্ড আইসক্রিম এক্সপো’ও একসঙ্গে আয়োজন করা হবে। কলকাতা ফুডটেক প্রদর্শনী থেকে বহু FMCG কোম্পানি, হোটেল মালিক, বেকার, দুধজাত পণ্য, মিষ্টি ও স্ন্যাক্স উৎপাদকরা তাদের বার্ষিক চাহিদা সংগ্রহ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
জানা গিয়েছে, ভারত, বিশ্বের একটি খাদ্য ঝুড়ি। ২১ শতকের খাদ্য শিল্পের শক্তিশালী কেন্দ্র হিসেবে উঠে আসছে এই দেশ। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের (এমওএফপিআই) তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্র ২০২৭ সালের মধ্যে প্রায় ১,২৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার আকারে পৌঁছানোর পথে রয়েছে। ২০২২ সালে ছিল ৮৬৬ বিলিয়ন ডলারের বাজার। ক্রমবর্ধমান ভোক্তা চাহিদা, পরিবর্তিত জীবনধারা এবং খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে এই বাজার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক ফুডটেক কলকাতা ২০২৪ প্রদর্শনীটি খাদ্য শিল্প এবং সংশ্লিষ্ট সেবাসমূহের বিরাত পরিসর গড়ে তুলবে৷ এর মধ্যে থাকবে খাদ্য ও পানীয়, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম, খাদ্য প্যাকেজিং, কোল্ড স্টোরেজ সিস্টেম, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, বেকারি এবং কনফেকশনারি যন্ত্রপাতি, আইসক্রিম তৈরির যন্ত্রপাতি এবং প্লান্ট, ভোজ্য তেল, মশলা, সুগন্ধি, রঙিন অ্যাডিটিভস, শিল্পিক শীতলীকরণ, শিল্প রেস্টুরেন্ট সরঞ্জাম, কাচ এবং কাচের বস্তু, টেবিলওয়্যার, সুবিধা দাতা ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি।
