ওয়েব ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমা প্রার্থনা ও কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরও তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। শুক্রবার কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর দিল্লি সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর শনিবার ৪০টিরও বেশি কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা স্পষ্ট জানিয়েছে, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে আইনি প্রক্রিয়ায় কৃষি আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।সূত্রের খবর, সেদিকে লক্ষ্য রেখে কোনওরকম ঢিলেমি দিতে চায় না কেন্দ্রীয় সরকার। তাই কৃষি আইন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে ফেলতে বুধবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হবে। ওই বৈঠকেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে ছাড়পত্র দেবে বলে খবর।
শুক্রবার দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেন, সরকার বিতর্কিত ৩টি কৃষি আইন প্রত্যাহার করবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সেই আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না প্রতিবাদী কৃষকরা। কৃষকদের যৌথ সংগঠন সংযুক্ত কিষান মোর্চা জানিয়েছে, শুধু মৌখিক আশ্বাস যথেষ্ট নয়। যতদিন না সরকার সংসদে বিল এনে সরকারিভাবে আইন প্রত্যাহার করছে, ততক্ষণ বিক্ষোভকেন্দ্র ছাড়বেন না তারা। শুধু তাই নয়, কৃষি আইন প্রত্যাহারের পাশাপাশি এমএসপি বা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা ও বিদ্যুৎ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবি-সহ আরও কিছু দাবি রয়েছে কৃষকদের। সেগুলিও মানতে হবে সরকারকে। যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও প্রত্যাহার হয়নি কৃষক বিক্ষোভ।
বিল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান, সংসদের আগামী অধিবেশনেই সরকার এই ৩টি বিতর্কিত আইন প্রত্যাহার করার আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবে। কৃষকদের উদ্দেশে তাঁর অনুরোধ ছিল, ‘এবার আপনারা ঘরে ফিরুন। মাঠে নামুন। চলুন সবকিছু নতুন করে শুরু করা যাক।’ কিন্তু কৃষকরা প্রধানমন্ত্রীর সেই ‘ঘরে ফেরার’ অনুরোধ রাখেননি। বরং তাঁরা পালটা চাপ দেওয়ার পন্থা নিয়েছেন। তাই বিল প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র।
ফলে বুধবার তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে,ওই বৈঠকের শুরুতেই কৃষি আইন প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাশ করানো হবে। আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। সেই অধিবেশনের একেবারে শুরুর দিকেই মন্ত্রিসভার সেই সিদ্ধান্ত পাশ করিয়ে নেওয়া হবে। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষেই সরকারিভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ৩টি কৃষি আইন। আসলে, সরকার সংসদের অধিবেশনের আগে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে চায় না। তাই তড়িঘড়ি প্রস্তাব পাশ করানোর চেষ্টা করছে বলে খবর।