ওয়েব ডেস্ক : প্রশ্নপত্রে লিঙ্গ বৈষম্যমূলক বিষয় থাকায় সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) কর্তৃপক্ষের কৈফিয়ত তলব করল দিল্লি নারী কমিশন। প্রশ্নপত্রে নারীবিদ্বেষের যে প্রশ্ন সামনে এসেছে, তা নিয়ে সিবিএসই কি পদক্ষেপ করেছে, জানতে চেয়ে সোমবার কমিশন নোটিশ করেছে। গত শনিবার সিবিএসই’র দশম শ্রেণির ইংরেজি পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে একটি অনুচ্ছেদ বা নিবন্ধ উল্লেখ করে প্রশ্ন রেখেছে সিবিএসই। ওই অনুচ্ছেদের একটি বাক্যে বলা হয়েছে, নারী স্বাধীনতা সন্তানের ওপর অভিভাবকদের কর্তৃত্বকে ধ্বংস করে। আর একটি বাক্যে বলা হয়েছে, স্বামীর অনুগত হলেই একমাত্র মায়ের বাধ্য হয় সন্তান। সিবিএসই’র এই প্রশ্নপত্রের স্ত্রীবিদ্বেষী ও পশ্চাদগামী মতামত-সহ উদ্ধৃতিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সিবিএসই মহিলাদের অসম্মান করেছে হ্যাশট্যাগ ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং হয়। যাঁরা এই অনুচ্ছেদ-সহ প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন, এই বিষয়কে নির্বাচন করেছেন, তাঁদের নাম, পদ ও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়েছে কিনা জানতে চেয়েছে কমিশন। কমিশন তার নোটিশে প্রশ্ন করেছে, প্রশ্নপত্রের এই অনুচ্ছেদ কি অভিজ্ঞ ও দক্ষদের দিয়ে যাচাই করা হয়েছিল? যদি হয়ে থাকে তার বিস্তারিত-সহ প্রশ্নপত্র বাতিলের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ করা হয়েছে তাও দিতে বলেছে কমিশন।
নারী কমিশনের নোটিশে স্পষ্ট নির্দেশ, ভবিষ্যতে পাঠ্যক্রম,পরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলিতে এমন নিবন্ধের প্রকাশ ঠেকানোর জন্য সিবিএসই কি কি পদক্ষেপ করছে, তার তালিকা করতে হবে ও এই বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে। কমিশন বলেছে, প্রশ্নপত্রের ওই নিবন্ধটি শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য আপত্তিকর নয়, এটি শিশুদের প্রতিও অত্যন্ত আপত্তিকর। এই নিবন্ধে এটা স্পষ্ট যে, লেখক একজন নারী বিদ্বেষী, আর নারী সমস্যা ও নারীবাদ সম্পর্কে তাঁর বিকৃত ধারণা রয়েছে। এই ধারণা কেবলমাত্র মহিলাদের স্বাধীন পরিচিতিকেই আক্রমণ করে তা নয়, শিক্ষার্থীদের প্রগতিশীল চিন্তাধারার উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটা জাতির ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্যকেও উৎসাহিত করে। এই ধারণা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। উল্লেখ্য,তীব্র সমালোচনার মুখে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকে ওই প্রশ্নগুলি বাদ দিয়েছে সিবিএসই। পাশাপাশি, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি পরীক্ষায় বাদ দেওয়া প্রশ্নের জন্য পূর্ণ নম্বর দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধি সিবিএসই’র দশম শ্রেণির ইংরেজি পরীক্ষায় নারীবিদ্বেষী প্রশ্নগুলির তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি দাবি করেন, এরজন্য নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে। এদিন কংগ্রেসের নেতৃত্বে ডিএমকে, আইইউএমএল, এনসিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাংসদরা সিবিএসই’র এই নারীবিদ্বেষী প্রশ্নপত্রের প্রতিবাদে লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন।