ওয়েব ডেস্ক : উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরির কৃষক হত্যাকাণ্ড ছিল একটি ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’। জানিয়েছে স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং টিম (সিট) বা বিশেষ তদন্তকারী দল। এই মামলায় মূল অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশীষ মিশ্র। আশীষ এখন জেলে রয়েছে। আশিস মিশ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি সংশোধন করা উচিত বলে এই মামলার তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার সংশ্লিষ্ট বিচারককে লিখিত জানিয়েছেন। আশীষ মিশ্র ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এরমধ্যেই হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে খুনের চেষ্টা ও অন্যান্য অভিযোগ যুক্ত করতে চেয়েছে সিট। উত্তর প্রদেশে ফের ক্ষমতা দখলের জন্য বিজেপি এখন জোরকদমে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সময়ে সিটের এই বক্তব্যে বিজেপির জন্য বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রে। মন্ত্রিত্ব থেকে তাঁকে বরখাস্ত করার দাবি ওঠার পরও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারে এখনও রয়েছেন তিনি৷ লখিমপুর খেরির হত্যাকাণ্ড কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। বাইশে নির্বাচন উত্তর প্রদেশে। তার আগে এই ঘটনা যথেষ্ট অস্বস্তিতে রেখেছে বিজেপিকে। কারণ, ভোটের বিচারে গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মধ্যে লখিমপুর একটি অন্যতম জেলা।
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে কৃষক বিক্ষোভের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ও তা ঘিরে সংঘর্ষে মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আশিস মিশ্রের এসইউভি পিষে মারে ৪ জন কৃষককে। এরপর হিংসা ছড়িয়ে পড়লে তাতে একজন সাংবাদিক-সহ আরও ৪ জন নিহত হয়। এ ঘটনার সময়ের কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি এসইউভি তীব্র গতিতে কৃষকদের পিষে দিয়ে চলে যাচ্ছে৷ এই কাণ্ডে ২টি এফআইআর দায়ের করেছে লখিমপুর পুলিশ। মৃত কৃষক পরিবারগুলো পক্ষ থেকে দায়ের করা একটি মামলায় আশিস মিশ্রকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর একটি এফআইআর দায়ের করেন লখিমপুরের বিজেপি কর্মী সুমিত জয়সওয়াল। হিংসা উসকে দেওয়ার জন্য অজ্ঞাতনামা কৃষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন তিনি। যদিও ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলিতে এই জয়সওয়ালকে কৃষকদের আঘাতকারী একটি এসইউভি থেকে দৌঁড়াতে দেখা গেছে। পরে তাঁকে আশিস মিশ্রের সহঅভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার করে পুলিশ। লখিমপুরে নৃশংস এই কৃষক হত্যাকাণ্ডের পর এনিয়ে একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের অনেক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে উত্তর প্রদেশ সরকার। গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট সিটকে এই মামলার দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়। তদন্তে ঢিলেমি, পক্ষপাত ও গাফিলতি যাতে না হয়, তারজন্য সিটের মধ্যে ৩ জন আইপিএস অফিসারকে যুক্ত করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। আদালত স্পষ্ট জানায়, এই ৪ জন আইপিএস অফিসার উত্তর প্রদেশ থেকে নেওয়া যাবে না।