ওয়েব ডেস্ক : জেলবন্দি ছেলের প্রসঙ্গ তুলতেই সাংবাদিকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র। একজন সাংবাদিককে ধাক্কাও মারেন তিনি ও সংবাদমাধ্যমকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করেন। বুধবার এমন ঘটনার ছবিই দেখা গেছে একটি ভিডিও ফুটেজে। এদিন উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে একটি অক্সিজেন প্লান্টের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র। সেখানে একজন সাংবাদিক তাঁর ছেলে আশিস মিশ্রের বিরুদ্ধে স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং টিম (সিট) বা বিশেষ তদন্তকারী দলের রিপোর্ট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই ক্ষেপে যান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বোকার মতো প্রশ্ন করবেন না। আপনি কি পাগল?’ চিৎকার করে ওঠেন মন্ত্রী। কেন্দ্রের মোদি সরকারের এই মন্ত্রী একজন সাংবাদিককে ধাক্কাও মারেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক সাংবাদিকের মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন মন্ত্রী। চিৎকার করে বলছেন, মাইক বন্ধ কর। এছাড়াও সাংবাদিকদের তিনি ‘চোর’ বলেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দেন মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা মন্ত্রীকে সরিয়ে নিয়ে যান।
গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের হত্যা একটি ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ ছিল বলে মঙ্গলবার রিপোর্ট দিয়েছে সিট। এরপরই অজয় মিশ্রকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্তের দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। সিটের রিপোর্টে বলা হয়েছে, লখিমপুর খেরিতে ‘খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে’ আশিস মিশ্রের এসইউভি গাড়ি দিয়ে কৃষকদের পিষ্ট করা হয়েছিল। এছাড়াও বলা হয়েছে, কৃষকদের মৃত্যুর ঘটনা ‘অবহেলায় মৃত্যু নয়’। ফলে আশিস মিশ্র ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ সংশোধন করা হবে। আর খুনের চেষ্টার অভিযোগ ও স্বেচ্ছায় আঘাত করার অভিযোগ যুক্ত করা হবে। আগেই আশিস মিশ্র ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল। অন্যদিকে, এদিন অজয় মিশ্রকে বরখাস্ত করার দাবিতে আলোচনার জন্য সংসদে নোটিশ দেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মন্ত্রী পদত্যাগ করুক। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাতে রাজি নন। সরকার যেভাবে কৃষি আইন ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে, তেমনই মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে বাধ্য করা হবে।’ এদিন সংসদে কেন্দ্রীয় এই মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ১৪টি বিরোধী দল এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদের ঝড় তোলে। যদিও বিরোধীদের চাপের কাছে হার মানতে ও অজয় মিশ্রকে অপসারণ করতে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে বিজেপি সরকার। বিজেপি দাবি করেছে, অজয় মিশ্রের ছেলে যা করেছে তার জন্য তাঁকে দায়ী করা যাবে না। উল্লেখ্য, আগামী বছরে উত্তর প্রদেশ-সহ ৫ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে মন্ত্রীকে রক্ষা করা নিয়ে যথেষ্ট বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছে বিজেপি সরকার। কারণ, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁর অভিযুক্ত ছেলে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।