ওয়েব ডেস্ক : ১৫টি চাকরির জন্য ভিড় প্রায় ১১,০০০ বেকার যুবকের। পিয়ন, ড্রাইভার ও ওয়াচম্যান পদের জন্য ভিড় করেছেন স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ইঞ্জিনিয়ার, এমবিএ’রাও। গত শনি ও রবিবার এই চিত্রই দেখা গেছে মধ্য প্রদেশের গোয়ালিয়র শহরে। কেবলমাত্র রাজ্যের নয়, প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশ থেকেও বেকার যুবকরা ভিড় করেছেন বলে খবর। এই চাকরির ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম পাশ চাওয়া হলেও উচ্চশিক্ষিতদেরও ভিড় দেখা গেছে।
জাতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে চাকরি প্রার্থী অজয় বাঘেল বলেন, ‘আমি একজন বিজ্ঞান স্নাতক। আমি পিয়ন পদের জন্য আবেদন করেছি। পিএইচডি করা যুবকরাও এখানে লাইনে আছেন।’ পাশাপাশি, আইন স্নাতক জিতেন্দ্র মৌর্য বলেন, ‘আমি ড্রাইভার পদের জন্য আবেদন করেছি। আমি বিচারকের পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি মাধব কলেজ থেকে এসেছি। পরিস্থিতি এমন যে মাঝে মাঝে বই কেনার টাকা থাকে না। তাই এই কাজের চেষ্টা করছি।’ অন্যদিকে আলতাফের মতো কয়েকজন এসেছেন প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশ থেকে। আলতাফ জানান, তিনি একজন স্নাতক। পিয়নের চাকরির জন্য এসেছেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরির বিষয়ে মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান সাম্প্রতিক দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ‘এক বছরে এক লাখ চাকরি দেব। আমরা ব্যাকলগ পোস্টগুলি পূরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাব।’ এর আবার কয়েকদিন আগে তাঁরই কথা ছিল, ‘সবাই সরকারি চাকরি চায়। কিন্তু এটা বাস্তব যে, প্রতিটি শিক্ষার্থী সরকারি চাকরি পেতে পারে না।’ প্রসঙ্গত, কর্মসংস্থান দফতরের হিসেব অনুযায়ী মধ্যপ্রদেশে মোট বেকার ৩২,৫৭,১৩৬ জন। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগে শুন্যপদের সংখ্যা প্রায় এক লাখ। এর মধ্যে স্কুলশিক্ষা বিভাগে ৩০,৬০০টি, স্বরাষ্ট্র দফতরে ৯,৩৮৮টি, স্বাস্থ্য বিভাগে ৮,৫৯২টি ও রাজস্ব বিভাগে ৯,৫৩০টি শূন্যপদ রয়েছে। চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, ঠিক এই কারণেই গোয়ালিয়রে কম বেতনের সরকারি চাকরির জন্যও এসেছেন হাজার হাজার যুবক।
সম্প্রতি সরকারের একটি ‘পথ-ব্যবসায়ী’ (street vendor) প্রকল্পে ১৫ লাখ আবেদন জমা পড়েছিল। এই আবেদন থেকে বেছে নেওয়া ৯৯,০০০ জনের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই স্নাতক। এনিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র নরেন্দ্র সালুজা বলেন, ‘শিবরাজ সিং চৌহানের সরকারের ১৭ বছরের উন্নয়ন আসলে কেমন তা এই চিত্র থেকেই বোঝা যায়।’ বিজেপি সরকারকে তাঁর কটাক্ষ, ‘কে বলেছিল একমাসে একলাখ শুন্যপদ পূরণ করা হবে? সেই নেতারা এখন কোথায়? তাঁরা কবে রাস্তায় নামবেন?’ যদিও, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই) অনুসারে, নভেম্বরে মধ্যপ্রদেশে বেকারত্বের হার ছিল মাত্র 1.7 শতাংশ। এই হার অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম। আবার, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)’এর তথ্যে প্রকাশ, গতবছর কেবলমাত্র মধ্য প্রদেশে বেকারত্বের কারণে কমপক্ষে ৯৫ জন আত্মহত্যা করে মারা গেছেন।