ওয়েব ডেস্ক : তিনি একটি বিরোধী জোট গড়তে চেয়েছিলেন, যে জোট ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করতে পারে। দাবি করলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। বিজেপিকে পরাস্ত করা ‘সম্পূর্ণ সম্ভব’ উল্লেখ করে সোমবার এমন দাবিই করেন তিনি। এমনকি আগামী মাসের ৫ রাজ্যে নির্বাচনের ফলাফলকে সেমিফাইনাল হিসাবে দেখা হলেও ও এই নির্বাচন বিরোধীদের পক্ষে প্রতিকূল থাকলেও তা সম্ভব বলে জানান কিশোর। এদিন জাতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’কে এক সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘২০২৪ সালে বিজেপিকে পরাজিত করা সম্ভব। কিন্তু বর্তমান বিরোধীদের দিয়ে কি বিজেপিকে হারানো সম্ভব? সম্ভবত না…। আমি একটি বিরোধী জোট গড়ে তোলায় সাহায্য করতে চাই। এই বিরোধী জোট ২০২৪ সালে আরও শক্তিশালী লড়াই দিতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘বিজেপি হিন্দুত্ব, জাতীয়তাবাদ ও জনকল্যাণের মতো ইস্যুকে একসঙ্গে জুড়ে করে এক ‘ভয়াবহ আখ্যান’ তৈরি করেছে। সেক্ষেত্রে এই ইস্যুগুলির মধ্যে অন্তত দুটিতে বিজেপিকে ছাড়িয়ে যেতে হবে বিরোধীদের।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ৫৪৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে প্রায় ২০০টি লোকসভা আসনে দ্বিমুখী লড়াই ছিল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। গত দুটি নির্বাচনে এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ জিতেছিল ক্ষমতাসীন দল। ফলে সহজেই ১৯০টি আসনে জয়লাভ করে তারা।’
নিজেকে একজন রাজনৈতিক সহযোগী বলে উল্লেখ করে ৪৫ বছর বয়সের এই ভোটকুশলী বলেন, ‘কোনো দল বা নেতা যদি বিজেপিকে পরাজিত করতে চায়, তাদের অন্তত এনিয়ে ৫ থেকে ১০ বছরের ভাবনা থাকতে হবে। ৫ মাসে এটা করা যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের পরে প্রায় মাসপাঁচেক সময়ের মধ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু জোট গড়ার সেই আলোচনা ভেস্তে গেছে। যদিও প্রশান্ত কিশোর ও কংগ্রেসের একসঙ্গে কাজ করা উচিত ও স্বাভাবিক বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু উভয় পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে গেলে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে।’ কংগ্রেসের সঙ্গে তেমন সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি বলে জানান তিনি। কিশোর বলেন, ‘আমি কংগ্রেসকে তারিফ করি। কংগ্রেস একটি দর্শন ও পরিসরের প্রতিনিধিত্ব করে।কংগ্রেসকে ছাড়া একটি কার্যকর বিরোধী শিবির সম্ভব নয়। তবে তার মানে এই নয় যে, বিরোধী জোটের নেতৃত্বে এই কংগ্রেসকেই থাকতে হবে।’ বিজেপিকে পরাজিত করতে কংগ্রেসের পুনর্গঠন জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অন্যদিকে, কংগ্রেসকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী নেতৃত্বে উঠে আসার চেষ্টাকে ‘প্রতিশোধ’ বলে মানতে নারাজ তিনি। তিনি বলেন, ‘এত বড় দলের প্রতি প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি খুবই ছোট। আমি মনে করি, আমাদের দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল দরকার।’ গণতন্ত্রের স্বার্থে কংগ্রেসকে দুর্বল হতে দেওয়া উচিত নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের পর তৃণমূল ও আই-প্যাক দেশের রাজনীতিতে পা রাখার কাজ শুরু করেছে। কংগ্রেস থেকে একের পর এক হাই-প্রোফাইল নেতার তৃণমূলে যোগদান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কিশোর বলেন, ‘যেখানে তাদের আমার সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আমাকে পেয়ে যায়।’