ওয়েব ডেস্ক : পুরভোটে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর কল্যাণগড়ে পোড়খাওয়া নেতাদের ওপরই আস্থা রাখল তৃণমূল। অন্যদিকে, বামফ্রন্ট প্রাধান্য দিল নতুন মুখের ওপর।শুক্রবার প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল ও বিরোধী বামফ্রন্ট। কংগ্রেস ও বিজেপির এখনও কোনও খবর নেই। বামফ্রন্ট ৬ নম্বর ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া বাকি সব ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। পুরোনো বাম প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন নিরুপমা ঘরামি, স্বপ্না নন্দী প্রমুখ। আর তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় অশোকনগরের পোড়খাওয়া নেতা সমীর দত্ত, প্রবোধ সরকার, অমল দে’রা রয়েছেন।এবার পুরসভা নির্বাচনে প্রাক্তন বিধায়ক ধীমান রায়কেও প্রার্থী করেছে তৃণমূল। যদিও এদিন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করার পরই ফের দলের অন্দরের বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে অশোকনগরে। এদিন সন্ধ্যায় পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীকে নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখায় একদল তৃণমূল কর্মী। বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, সুমন পালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ও তিনি কর্মীদের সঙ্গে থাকেন না। তাই এই ওয়ার্ডে প্রার্থীপদের দাবিদার নোটন দাসের সমর্থকরা অশোকনগরের ১/৩ এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন। পাশাপাশি, প্রবীণ নেতা সিদ্ধার্থ সরকার (চণ্ডী)-কে প্রার্থী না করায় অশোকনগর নৈহাটি রোড অবরোধ করেন তৃণমূলের একদল কর্মী-সমর্থক। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এছাড়াও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বদলের দাবি অশোকনগরে কিছু সময় রেল অবরোধ করেন একদল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক।
অন্যদিকে, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীকে বদল করার দাবিতে সরস্বতী পুজোর সকালে যশোর রোড অবরোধ করেন একদল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক।এখানে দল প্রার্থী করেছে প্রাক্তন বিধায়ক ধীমান রায়কে। প্রতিবাদী তৃণমূল কর্মীদের দাবি, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ধীমান রায় বহিরাগত। তাই স্থানীয় প্রার্থীর দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। শনিবার সকালে অশোকনগর বিল্ডিং মোড়ে যশোর রোডে শুরু হয় অবরোধ। সরস্বতী পুজোর সকালে অবরোধের জেরে নাকাল হন নিত্যযাত্রীরা। পাশাপাশি, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে গতকাল প্রথমে গৌতম দত্তের নাম ঘোষণা করা হয়। আর তা নিয়ে বিক্ষোভের জেরে রাতেই গৌতম দত্তের বদলে প্রার্থী করা হয় প্রবীণ নেতা অমল দেকে। এই প্রার্থী বদলের প্রতিবাদে এদিন শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। সরস্বতী পূজার সকালে যশোর রোডে এক কিলোমিটারের মধ্যে দুটি অবরোধ ঘিরে দুর্ভোগের শিকার হন নিত্যযাত্রীরা। রাজনৈতিক মহলের দাবি, পুরভোটের প্রার্থী নিয়ে দলের পতাকা হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রমাণ করেছে যে, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না বলে দু’দিন আগে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বার্তা দিয়েছেন, তাকেও গুরুত্ব দিতে নারাজ এই কর্মী-সমর্থকরা। যদিও, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের সাংগঠনিক নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তৃণমূল দল একটাই। এর কোনও গোষ্ঠী নেই। দলের অন্দরে বিরোধ বরদাস্ত করা হবে না। শুক্রবার রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও স্পষ্ট বলেছেন, দল যাঁকে প্রার্থী করবে, তাঁকেই মেনে নিতে হবে। উল্লেখ্য, ভোটযুদ্ধ শুরু হতে না হতেই অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী শাশ্বতী সাহার ব্যানার ছিড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সিপিএম এই ঘৃণ্য কাজের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে।