অভিরূপ চক্রবর্তী, হাবরা, উত্তর ২৪ পরগনা
শিক্ষার্থীদের সাফল্যে উজ্জ্বল হয় গুরুর মুখ। এমন এক গুরু হলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা মনসাবাড়ি এলাকার অর্জুন সাহা। তিনি নাচের শিক্ষক। এরমধ্যেই তাঁর ছাত্রছাত্রীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাফল্য অর্জন করেছে। নিজের প্রচেষ্টায় অনেক দুঃস্থ ছেলেমেয়েকে বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। ছোটোবেলা থেকে লড়াই সংগ্রাম করে বেড়ে উঠেছেন অর্জুন। এই লড়াইয়ে তাঁর শক্তি হলেন মা রেবা সাহা। আর ছোটোবেলায় বাবা অজয় সাহা (বাপি সাহা) এক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন ও বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। তখন অর্জুনের বয়স মাত্র ১০ বছর । সেই থেকে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে লড়াই শুরু মা রেবা দেবীর। মায়ের ইচ্ছেতেই নাচ শেখা। রেবা দেবীর স্বপ্ন ছিল, একদিন অনেক বড়ো নৃত্যশিল্পী হবে অর্জুন।
এখন দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহু পুরস্কারে সন্মানিত হয়েছেন তিনি। আজ তিনি নৃত্যগুরু। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি যেমন কড়া, তেমনই আবার স্নেহের ছায়ায় আগলে রাখেন তাঁদের। অর্জুন জানান, সফল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ১০ বছরের হিরণ চক্রবর্তী সম্প্রতি নৃত্যের ওপর ডক্টরেট করেছে। এছাড়া চয়ন পাল, প্রশান্ত মন্ডল-সহ আরও অনেকেই রাজ্য ও জাতীয় স্তরে বহু সন্মান লাভ করেছে। এইরকম এক সফল গুরু অর্জুন সাহা সম্প্রতি ওড়িশায় কটক মহোৎসবে আন্তর্জাতিক গুরুমনি সন্মান পুরস্কার পেয়েছেন। মায়ের ইচ্ছেপূরণ হয়েছে। মা আশীর্বাদ করছেন, তাঁর ছেলে যেন জীবনে আরো অনেক সাফল্য অর্জন করে। অর্জুন শুধুমাত্র শিল্পী নন, একজন ভালো মনের মানুষ। তাঁর কথায়, অনেকেরই প্রতিভা আছে, কিন্তু আর্থিক সমস্যার জন্য নাচ শিখতে পারে না, তাঁদের পাশে দাড়াতে চান। রেলস্টেশন থেকে ভবঘুরের মতো ঘুরতে থাকা একটি ছেলেকে এনে সফল শিল্পী বানিয়েছেন অর্জুন। তাঁর স্বপ্ন, আগামীদিনে দুঃস্থ পরিবারের প্রতিভাবান শিল্পীদের নিয়ে একটা গ্রুপ তৈরি করবেন।