ওয়েব ডেস্ক : ভারতের মতো বৈচিত্র্যময় দেশের জন্য গণতন্ত্র সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা। শুক্রবার তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসনের মাধ্যমে দেশের সমৃদ্ধশালী বৈচিত্র্য টিকে থাকতে পারবে না। এদিন সিবিআই-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে ১৯তম ডিপি কোহলি স্মারক বক্তৃতা দেন তিনি। ভারতের প্রধান বিচারপতি রামানা বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, আমাদের মতো বহুত্ববাদী সমাজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হল গণতন্ত্র। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসনের মাধ্যমে আমাদের সমৃদ্ধশালী বৈচিত্র্যকে টিকিয়ে রাখা যাবে না। একমাত্র গণতন্ত্রের মাধ্যমেই আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্য ও বহুত্ববাদকে টিকিয়ে রাখা যাবে, আর শক্তিশালী করা যাবে।’
‘গণতন্ত্র : তদন্তকারী সংস্থাগুলির ভূমিকা ও দায়িত্ব’ বিষয়ে এদিন তাঁর বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পিছনে আমাদের স্বার্থ রয়েছে, কারণ আমরা মূলত গণতান্ত্রিক জীবনযাপনে বিশ্বাস করি। আমরা ভারতীয়রা আমাদের স্বাধীনতাকে ভালবাসি। যখন কোনও ভাবে আমাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, তখন আমাদের সতর্ক নাগরিকরা স্বৈরাচারীদের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে দ্বিধা করেনি।’ তাই, পুলিশ ও তদন্তকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে উন্নত ও শক্তিশালী করা জরুরি। এইসব প্রতিষ্ঠানে কোনও কর্তৃত্ববাদী প্রবণতাকে ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়। সংবিধান নির্ধারিত গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে কাজ করতে হবে। যে কোনও ভুল এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে ও আমাদের গণতন্ত্রকে দুর্বল করবে বলেও এদিন জানান রামানা।
বিচারপতি রামানা আরও বলেন, পুলিশ ও তদন্তকারী সংস্থাগুলোর বাস্তবিক বৈধতা থাকতে পারে, কিন্তু প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের সামাজিক বৈধতাও পেতে হবে। পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে ও মন দিতে হবে অপরাধ দমনে। সমাজে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জনগণের সহযোগিতায় তাদের কাজ করা উচিত। সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, রাজনৈতিক নেতা ও পদাধিকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করে এই তদন্ত সংস্থাকে কাজ করতে হবে। কাজের মাধ্যমেই বাড়াতে হবে বিশ্বাসযোগ্যতা। সিবিআই, ইডিসহ বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থাকে এক ছাদের নিচে আনতে একটি ‘স্বাধীন প্রতিষ্ঠান’ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।