ওয়েব ডেস্ক : শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য যৌথ আবেদন জানাল ১৩টি বিরোধী দল। সেই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনায় জড়িতদের জন্য কঠোর শাস্তি দাবি করল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন বিষয়কে নিয়ে অশান্তি চলছে। সম্প্রতি রামনবমীর শোভাযাত্রা ঘিরে বেশ কয়েকটি রাজ্যের বেশকিছু এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু এ নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কোনও হেলদোল নেই। সাম্প্রদায়িক অশান্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতাকে তীব্র আক্রমণ করে শনিবার বিরোধী দলগুলির ওই আবেদনে বলা হয়েছে, স্বাক্ষরকারীরা হতবাক। কারণ, যারা ধর্মান্ধতার প্রচার করে ও যারা তাদের কথা ও কাজ দিয়ে আমাদের সমাজকে উস্কে দেয় ও উসকানি দেয়, তাদের কথা ও কাজের বিরুদ্ধে একটি শব্দ উচ্চারণ কর্তেও ব্যর্থ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। .প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতায় এটা প্রমাণিত যে, এই ধরনের বেসরকারি সশস্ত্র জনতা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অশান্তি সংগঠিত করে। ওই যৌথ আবেদনে স্বাক্ষরকারী দলগুলির মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপি, সিপিআই (এম), ডিএমকে, সিপিআই, আরএসপি, আরজেডি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, আইইউএমএল, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, ফরোয়ার্ড ব্লক ও সিপিআইএমএল লিবারেশন। যদিও, এই তালিকায় নেই শিবসেনা, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও আম আদমি পার্টি।
এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা সলমান খুরশিদ। যৌথ আবেদনে কয়েকটি বিরোধী দলের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই আবেদন শেয়ার করে ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, এসপি, বিএসপি, আপ নিষ্ক্রিয়? এদিন যৌথ আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন সোনিয়া গান্ধি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শারদ পাওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, এমকে স্ট্যালিন, ডি রাজা, মনোজ ভট্টাচার্য, তেজস্বী যাদব, ফারুক আবদুল্লা, পিকে কুনহালকুট্টি, হেমন্ত সোরেন, দেবব্রত বিশ্বাস ও দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। ওই আবেদনে তাঁরা বলেন, প্রথাগত খাদ্য, পোশাক, বিশ্বাস, উৎসব ও ভাষা সম্পর্কিত বিষয়কে যেভাবে সামাজিক মেরুকরণ করছে সরকারি প্রতিষ্ঠানের একাংশ, তাতে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত।
ব্যক্তিগত বিশ্বাস, পোশাক, খাদ্য বিধিনিষেধ ও একটি নির্দিষ্ট ভাষা আরোপের বিষয়ে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ও বিরোধের ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, আমরা আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস থেকে বলছি যে, বহুমাত্রিক বৈচিত্র্যকে সম্মান করলে, এর পরিসর রাখলে ও উদযাপন করলে তবেই সমৃদ্ধ হবে আমাদের দেশ। এছাড়াও বিরোধী নেতানেত্রীদের যৌথ আবেদনে বলা হয়েছে, আমরা দেশে বিদ্বেষ ভাষণের ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলির জন্য অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কারণ, এর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ও এর বিরুদ্ধে কোনও কার্যকরী ও শক্তিশালী পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়ানো নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তাঁরা। ওই আবেদনে সব শেষে বলা হয়েছে, আমরা জনগণের সকল অংশকে শান্তি বজায় রাখার জন্য ও যারা সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকে তীক্ষ্ণ করতে চায়, তাদের অশুভ উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমরা সারাদেশে আমাদের সমস্ত পার্টি ইউনিটকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য স্বাধীনভাবে ও যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই। .