ওয়েব ডেস্ক : সহিংসতার মতো অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বাড়িঘর ধ্বংস করতে বুলডোজার ব্যবহার করেছে মধ্য প্রদেশ সরকার। অভিযুক্তদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করল ইসলামিক সংস্থা জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ। জমিয়তের আবেদন, কোনও ফৌজদারি মামলায় কোনও দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ না করার জন্য ভারত সরকার ও সব রাজ্যকে সুপ্রিম কোর্ট উপযুক্ত নির্দেশ জারি করুক। সেই সঙ্গে জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ আবেদন করেছে, সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশও জারি করুক যে, অভিযুক্তদের আবাসিক বাসস্থানকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভেঙে ফেলা যাবে না।
এক ট্যুইট বার্তায় জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দের সভাপতি আরশাদ মাদানি বলেন, ‘জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ বুলডোজারের বিপজ্জনক রাজনীতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেছে। সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে মুসলিমদের ধ্বংস করার জন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যে অপরাধ দমনের নামে এই রাজনীতি শুরু হয়েছে।’ জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ তার পিটিশনে বলেছে, সম্প্রতি সহিংসতার মতো অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বেশ কয়েকটি রাজ্যে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পত্তি ভেঙে দিচ্ছে সরকার। এমন ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে।
বেশ কয়েকটি রাজ্যে সহিংসতার মতো অপরাধের ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বাড়িঘর ধ্বংস করার জন্য বুলডোজার ব্যবহার করছে প্রশাসন। মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও বিধায়ক এই ধরনের কাজকে সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছেন। বিশেষ করে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির বাড়িঘর ও বাণিজ্যিক সম্পত্তি ধ্বংস করার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। জমিয়ত তার আবেদনে বলেছে, সাংবিধানিক নীতি ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গিয়ে এই ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অধিকার লঙ্ঘনও করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ আদালতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা-সহ আমাদের দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সরকারি এই পদক্ষেপে প্রাক-বিচার ও বিচারের পর্যায়-সহ আইনি প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। তাই এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। সুপ্রিম কোর্টকে এই ঘটনাগুলি বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছে জমিয়ত। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এমন পদক্ষেপ যাতে আর করতে না পারে ও অন্যান্য রাজ্য সরকারও যাতে এমন পদক্ষেপ না করে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছে। জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ নির্দেশনা চেয়েছে যে, কোনও বাণিজ্যিক সম্পত্তি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে ভেঙে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি তাদের আবেদন, গোষ্ঠী সংঘর্ষের মোকাবিলায় পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশনা জারি করুক আদালত।