অলোক আচার্য, নববারাকপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
এলাকার কৃতী ও মেধাবী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা দিল নববারাকপুর পুরসভা। গত শনিবার বিকেলে পুরসভার উদ্যোগে স্থানীয় কৃষ্টি প্রেক্ষাগৃহে এক অনুষ্ঠানে এই পড়ুয়াদের পাশাপাশি তাদের মায়েদেরও সংবর্ধিত করা হয়। বিভিন্ন বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ নম্বর প্রাপ্ত সফল কৃতী পড়ুয়া ও তাদের মায়েদের সংবর্ধিত করা হয় এদিন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পুরসভার পুরপ্রধান প্রবীর সাহা। অন্যতম অতিথি ছিলেন সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, আগে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের এত স্বীকৃতি ছিল না। এখন পুরসভা এগিয়ে এসে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধিত করছে। উচ্চশিক্ষায় উৎসাহ প্রদান করছে। এই উদ্যোগে সমাজের সবার সমর্থন রয়েছে। পুরসভার এই উদ্যোগকে খুব ভালো কাজ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর দীর্ঘ শিক্ষা জীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে পড়ুয়াদের উদ্দেশে সাংসদ বলেন, তোমরা বড় হও। ভালো হও। ভালো মানুষ হও। বড় হয়ে বাবা মায়ের ঋণ বা কৃতজ্ঞতা শোধ করার চেষ্টা করবে। বাবা মায়ের একটা বড় অবদান রয়েছে তোমাদের এগিয়ে যাওয়ার পিছনে। বাবা মায়ের কথা ভুলে যাবে না। মনে রেখো এতটা এগোতে পারতে না। আমি খুব কৃতার্থ এবং আনন্দিত। কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কাকতালীয় ভাবে আমার ৭৫তম জন্মদিনও পালন করল নববারাকপুর পুরসভা। নিজেকে আরও প্রাচীন মনে হল। স্বাধীনতার ৭৫ বছরের শুভেচ্ছা। কৃতজ্ঞতা জানাই নববারাকপুর পুরসভার পুরপ্রধান প্রবীর সাহা-সহ সব কাউন্সিলারকে। অধ্যাপক সৌগত রায় আরও বলেন, যখন পড়াতাম তখন ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। পাশে থেকেছি। নববারাকপুর শহরের মানুষ তিন তিনবার লোকসভা নির্বাচনে জিতিয়েছে। যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা করে যাব। সেবা করাই তো জনপ্রতিনিধির কাজ। নিউ বারাকপুর শহর লেখাপড়ার ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। হরিপদ বিশ্বাস অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাস্তা দেখিয়েছেন সেই রাস্তা ধরে সেবা করে যাব।
সাংসদ অধ্যাপক সৌগত রায় ছাড়াও
এই অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা পরিষদের সহসভাধিপতি কৃষ্ণ গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়, নববারাকপুর পুরসভার উপপুরপ্রধান স্বপ্না বিশ্বাস, ডাঃ পংকজ কুমার অধিকারী, ডাঃ আশীষ বোস, ডাঃ চন্দন চট্টোপাধ্যায়, সমাজসেবী তপন দাস, পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধিরা।
অন্যদিকে, এদিন পুরপ্রধান প্রবীর সাহা জানান, বিগত দু’বছর করোনা অতিমারির কারণে এমন অনুষ্ঠান করতে পারেনি পুরসভা। এবছর পুরসভা এলাকায় মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক ও বিভিন্ন বোর্ডের ৭৫ শতাংশ নম্বর প্রাপ্ত প্রায় ৪৮৫ জন কৃতী ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি তাদের মায়েদের সন্মানিত করেছে। মায়েদের হাতে একটি করে ফলের গাছ তুলে দেওয়া হয়েছে। শহরের সবুজায়নে সন্তানের মতো গাছগুলো এই মায়েরা বড় করে তুলবেন। ফল পাবেন তারাই। এদিন কৃতী পড়ুয়াদের উত্তরীয়, কলম, গোলাপ ফুল, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনাবলী, সন্মাননা স্মারক, মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়েছে। আর মায়েদের উত্তরীয় এবং ফলের গাছ দিয়ে সন্মানিত করা হয়েছে। এই উদ্যোগকে একটা অভিনব ভাবনা উল্লেখ করে পুরপ্রধান আরও বলেন, কৃতী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় তাদের মায়েদের বড় অবদান রয়েছে।