সুকুমার রঞ্জন সরকার
মনে জেদ আর লাগাতার চেষ্টা থাকলে সব সম্ভব।সেটাই দেখালেন আদিবাসী কন্যা শেফালী ওঁরাও।দরিদ্র চা শ্রমিক পরিবারের মেয়ে হয়েও ইঞ্জিনিয়ার হলেন তিনি। প্রমাণ করলেন মনে জেদ থাকলে সব প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছোনো সম্ভব। জলপাইগুড়ি জেলার ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ১০ নম্বর লাইনের বাসিন্দা শেফালী ওঁরাও। তাঁর ডাক নাম ববিতা। ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেন ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কিন্তু দারিদ্র্য যে সংসারের নিত্যসঙ্গী, সেই সংসারে থেকে এধরনের স্বপ্ন দেখা অসম্ভবইকে সম্ভব করার সামিল। এছাড়াও রয়েছে প্রতিবেশীদের বিদ্রুপ। ববিতাকে কোনও কিছুই আটকাতে পারেনি। অসম্ভবকে সম্ভব করেই দেখালেন তিনি।
মা ললিতা ওঁরাও চা বাগানের শ্রমিক, বাবা রাজেশ ওঁরাও শিলিগুড়িতে রাজমিস্ত্রীর যোগাড়ের কাজ করেন। ৪১% নম্বর নিয়ে ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর বাড়ি থেকে ববিতার বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু তিনি বিয়েতে রাজী না হয়ে ভর্তি হন উচ্চমাধ্যমিকে। ২০১৯ সালে ৬২% নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ভর্তি হন রাজগঞ্জ সরকারি পলিটেকনিক কলেজে। এবছর ৭১% নম্বর নিয়ে পাশ করেন তিনি। তার ইচ্ছা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক করবেন। ববিতার এই সাফল্য চমকে দিয়েছে সবাইকে। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য এবং ওই সংস্থার মহিলা ফুটবল দলের নিয়মিত খেলোয়াড় তিনি। তাঁর এই সাফল্যে খুশীর জোয়ারে ভাসছে গোটা এলাকা। চা শ্রমিক পরিবারের ছেলে মেয়েদের পড়াশোনায় উৎসাহিত করছে ববিতার সাফল্য।