ওয়েব ডেস্ক : ‘তদন্তে ভয় পাচ্ছে ওরা। তদন্ত হোক। যদি সৎ মুখ্যমন্ত্রী হতেন, বলতেন তদন্ত হোক।’ নিয়োগ দুর্নীতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এভাবেই তোপ দাগলেন সিপিএমের সাংসদ, আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। রবিবার বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর গোলবাজারে নর্থ ২৪ পরগনা ডিস্ট্রিক্ট মিউনিসিপ্যাল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নবম সম্মেলনের প্রকাশ্য সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তুলোধোনা করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই তদন্ত হলে পরে বিপদ আছে, তাই বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য আমার বিরুদ্ধে তোপ দাগছে। আমি বলেছি ভাই প্রমাণ করে দিন, আমার কোনও আপত্তি নেই, আমি মিষ্টি খাওয়াবো। তা মিষ্টি খেতেও আপত্তি! তৃণমূলী ভাইয়েরা দিদিকে গিয়ে বলুন, দিদি এটা একটা তদন্ত করে দিন না। একহাড়ি বলেছেন, সেখানে নয় পাড়ায় পাড়ায় একহাড়ি করে পাঠাবে। আচ্ছা আমি পাঠাব। দু চারটে বেশি মামলা করে পাঠাব। কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সে সৎ সাহস নেই।’
এদিন সাংবাদিকদের সামনে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, এত বড়ো দুর্নীতি একটা সরকার করতে পারে এটা সভ্য সমাজে অকল্পনীয় ব্যাপার। মালদায় মৎস্য ব্যবসায়ী থেকে সিআইডির কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসলে এটা কেন হয়েছে জানেন তো, সিআইডির কাছে খবর ছিল ওখানে সিবিআই হানা দেবে। তৎপরতার সঙ্গে হানা দিয়ে তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আর করতে পারেনি। এত টাকা গোপন করবে কি করে! সেজন্য সিআইডির উচিত অবিলম্বে সমস্ত তথ্য সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া। সিবিআই অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াচ্ছে। যদি তিনি নবান্নের ১৪ তলায় রেইড করেন, আরও বেশি উদ্ধার হবে। ওই আসল মানুষটাকে গ্রেফতার করলে তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।’
অন্যদিকে, দেশের উন্নয়নের মুকুটে নয়া পালক। বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্রিটেনকে টপকে ৫ নম্বর অবস্থানে এসেছে ভারত। এনিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিপিএম সাংসদ বলেন, পরিসংখ্যান দিয়ে বাস্তবকে ঢাকা যায় না। তিনি বলেন, ‘যত উন্নতি হয় তত ভালো কথা, কিন্তু এই যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। প্রকৃত পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে আমরা কোভিডের আগের স্টেজে ফিরে গেছি। খুব বেশি এগোইনি। এ সমস্ত বলছেন বলুন, ভালো কথা, কিন্তু মানুষের ঘরে খাদ্য পৌছোচ্ছে না, জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। এগুলি বাস্তব। আর পরিসংখ্যান দিয়ে বাস্তবকে ঢাকা যায় না।’ উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে বেকায়দায় ফেলার অন্যতম নায়ক সিপিএম সাংসদ, আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ছিলেন এই প্রকাশ্য সভার প্রধান বক্তা। এদিন তাঁর জনসভা ঘিরে অশোকনগরের সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা যায়।
গণসংগীত শিল্পী সৌমেন রায়ের সঙ্গে গলা মিলিয়ে জয়ের চ্যালেঞ্জ নেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। এদিন এই সভার শুরুতে গণসংগীত শিল্পী সৌমেন রায় বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন নর্থ ২৪ পরগনা ডিস্ট্রিক্ট মিউনিসিপ্যাল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি শিবরাম রায়, সম্পাদক সঞ্জীব দে, সিআইটিইউ নেত্রী গার্গী চ্যাটার্জি, সিআইটিইউ নেতা দীপক মিত্র, সিপিএম নেতা বাবুল কর, সত্যসেবী কর প্রমুখ।