ওয়েব ডেস্ক : অমল চৌধুরি। দূরদর্শনের শিল্পী। টিভি আর্টিস্ট। সুপরিচিত অমল অসুর নামেও। ১৯৯৪ সাল থেকে বেশ কয়েক বছর মহালয়ার ভোরে দূরদর্শনে মহিষাসুর মর্দিনীতে অসুরের ভূমিকায় অভিনয় করেন। জনপ্রিয়ও হয়ে ওঠেন তিনি। এই যে বাড়ি দেখছেন, এই বাড়িতেই থাকেন অমল অসুর। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমল চৌধুরি অভিনয় করেছেন একাধিক সিরিয়াল ও সিনেমাতেও। সেসব এখন স্মৃতি। অ্যালবামের বিবর্ণ হয়ে যাওয়া ছবি। ছেলেবেলায় অমল চৌধুরির ছবি আঁকার শখ ছিল। ছাত্রজীবনে স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবেন। চরম অভাব ও নানান টানাপোড়েনে শেষমেষ ভর্তি হন ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজে। কাঠগোলায় সামান্য বেতনের চাকরির পাশাপাশি আর্ট কলেজের পড়া শেষ করেন তিনি। এরপর ছবি আঁকা শেখানো শুরু করেন। তাঁর চেহারা ছিল অসুরের মতো। ডাকাতদের সঙ্গেও মিল পেতেন অনেকে। তাঁর ঝাকরা চুল, পাকানো গোঁফ, চওড়া পেশী তাঁকে দূরদর্শনে অসুরের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ দেয়। অভিনয় দক্ষতায় অসুর হিসেবে জনপ্রিয়ও হন। এরপর অসুর, ডাকাত, লেঠেলের ভূমিকায় একাধিক সিরিয়াল ও সিনেমায় অভিনয় করেন। অভিনয়, ছবি আঁকা শেখানো, প্রাইভেট টিউশন এসব করেই জীবন কাটাতেন তিনি। বছর দশেক আগে হঠাৎই পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। পরিবারের একাধিক সদস্যের গুরুতর অসুস্থতা, পর পর মৃত্যুর ঘটনায় স্টুডিও পাড়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর। এই বিচ্ছিন্নতার পর তিনি আর কাজ পাননি। ১১ বছর তিনি অভিনয়ের ডাক পাননি।
যখন অসুর হন অমল চৌধুরি, তখন এতগুলো টিভি চ্যানেল আসেনি। এত চ্যানেলে মহালয়ায় মহিষাসুর মর্দিনী হতো না। এখন অসুর একাধিক চ্যানেলে দরকার হয়, অথচ কাজ নেই অমল অসুরের। এখন গাড়ির গায়ে তুলির টান দিয়ে কোনও রকমে বেচে আছেন তিনি। অসুস্থ দিদিকে নিয়ে ভাঙাচোরা বাড়িতে তীব্র অভাবের মধ্যেও বেচে আছেন। তবুও স্বপ্ন দেখেন, ছবি আঁকা শিখিয়ে আর অভিনয় করে জীবনের বাকি দিনগুলো কাটাবেন। একটু সহযোগিতা দরকার তার। এখনও সরকারি কোনও সহযোগিতা পাননি তিনি। শুক্রবার তার বাড়িতে আসেন যুব তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই প্রতিনিধি দল এই অভিনেতার বাড়িতে আসেন বলে খবর। এদিন টেলিফোনে অমল চৌধুরির সঙ্গে যুব তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষের কথা বলিয়ে দেন ওই প্রতিনিধিরা। তার পাশে থাকবেন আশ্বাস দেন সায়নী। আশ্বাস দিয়েছে যুব তৃণমূল প্রতিনিধি দলও।