পার্থ মিত্র
শেষ বার কবে আমি এই বাক্সটাকে ব্যবহার করেছি মনে পড়ছে না। খাকি জামা প্যান্টের সঙ্গে ম্যাচিং করা টুপি। জি-মেইল, হোয়াটসআপ, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের সংস্কৃতিতে নিজেকে ঢালাই করেছি। একটা লোহার বাক্স কিন্তু যেন প্রাণে ভরপুর, কত মানুষের আবেগ অনুভূতি ভালো লাগা আনন্দ আবার দুঃখেরও সঙ্গী এই বাক্স৷ আর এই সূত্রেই আসে হাতে লেখা চিঠির কথা, যা এখন কেবলমাত্র সিলেবাসের একটা অংশ ছাড়া কিছু নয়। চিঠি আর পোস্ট বাক্স একে ওপরের পরিপূরক৷ ১৮৩৭ সালে প্রথম ভারতীয় ডাকঘর প্রতিষ্ঠা হয়। তারপর সুনামের সাথে তার যাত্রা চলে। কিন্তু পূর্বে প্রচুর মানুষ যে হাতে লেখা চিঠিতে যোগাযোগ রাখতেন আজ তা প্রায় উঠেই গেছে। সরকারি কিছু কাগজ ছাড়া এই মাধ্যমের তেমন কোনও ব্যবহার নেই। চিঠি লেখার সাথে সাথে মানুষের কত অনুভূতি, সুন্দর গোছানো হাতের লেখায় সাদা পাতাটা হয়ে উঠত জীবন্ত। কিংবা বাঁকানো কাটাকুটি লেখায় খুঁজতাম নিজের আপনজনকে। এখন ডিজিটাল যুগে এক আঙুলের চাপে ছোঁয়া যাবে বিশ্বের এই প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। কিন্তু তাতে কতগুলো ডিজিট কতগুলো লেটার সাজানো থাকবে। পাওয়া যাবে না হাতের স্পর্শ, উষ্ণতা। গরমে কালির লেখায় ঘাম পড়া ফোটার ছাপ। আর পুরোনো হলেও এই চিঠিই ছিল গোপন খবর আদান প্রদানের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম, মাতৃভাষা চর্চার পরিসরও। তাই আসুন, আমরা সকলে মিলে একটু চেষ্টা করে দেখি, বাঁচিয়ে রাখি আমাদের এই ভালো অভ্যেসকে। সুখ দুঃখের সঙ্গী সেই লেটার বক্স আধুনিকায় ফিরে আসুক। কালি, কলম আর মন যৌথতায় সক্রিয় হয়ে উঠুক ভাব, ভালোবাসা আর ভাবনার আদানপ্রদানে।