আশিস কুমার ঘোষ, কলকাতা

কলকাতার নভোহটেলে গত সোমবার অনুষ্ঠিত হলো বেঙ্গল বিজনেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ এবং বাংলার সেরা তিলোত্তমা ২০২৪-২৫। বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠান হয়ে উঠল বাংলা তথা পূর্ব ভারতের সমৃদ্ধ প্রতিভার এক অনন্য উদযাপন। ব্যবসা এবং ফ্যাশন দুনিয়ার আগ্রহী প্রতিভাবানদের জন্য তৈরি হলো এক নতুন সম্ভাবনার মঞ্চ। পূর্ব ভারতের সর্বাধিক সম্মানজনক ফ্যাশন ট্যালেন্ট প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠার লক্ষ্যে এই আয়োজন শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যের উপরেই জোর দেয়নি, বরং ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের অভ্যন্তরীণ শক্তি এবং সক্ষমতাকেও উদযাপন করেছে। সর্বোপরি সর্বাঙ্গীণ ক্ষমতায়নের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ আয়োজনের অন্যতম প্রধান কান্ডারি ছিলেন শীর্ষেন্দু নিয়োগী। তিনি একজন সফলতম উদ্যোগপতি। যিনি ব্যবসায়িক দিক থেকে দক্ষ, সেই সঙ্গে সমাজসেবার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। অ্যাস্ট্রোভিশন এন্টারপ্রাইজ় প্রাইভেট লিমিটেড-এর ডিরেক্টর এবং সমাজসেবামূলক সংস্থা ভিশনারি চার্টার্ড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে তিনি বহু সমাজকল্যাণমূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। শিশুস্বাস্থ্য এবং শিক্ষা, নারীশক্তির বিকাশ, মাদকবিরোধী সচেতনতা এবং চিকিৎসা সহায়তার মতো প্রকল্পগুলিতে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছেন।

ভিশনারি চার্টার্ড ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে তিনি সমাজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত অংশের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সামাজিক উন্নয়নের পথ তৈরি করেছেন। এই আয়োজনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকাই প্রমাণ করে দেয় যে, তিনি সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নে এবং প্রতিভার বিকাশে বিশ্বাসী, যেখানে প্রত্যেকে তাঁদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছতে পারেন। এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ আলোকিত করেছেন নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত প্রখ্যাত জ্যোতিষী, জীবন প্রশিক্ষক এবং সমাজসেবী ড. সোহিনী শাস্ত্রী। দু’টি রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। পেশাগত সাফল্যের পাশাপাশি, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও মহিলাদের কল্যাণে অসামান্য অবদানের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি পেয়েছেন ‘বাংলার সেরা গৌরব’-এর সম্মান। নারী ক্ষমতায়নের এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে তিনি বরাবরই নারীদের অভ্যন্তরীণ শক্তি এবং বাহ্যিক সৌন্দর্যকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন ‘নারী হয়ে জন্ম নেওয়া এক গর্বের বিষয়। নিজের নারীসত্তাকে উদযাপন করুন।’ তাঁর এই কথাগুলি স্বভাবতই দর্শকদের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে। সেই সঙ্গে নারীদের জন্য এক সহায়ক পরিবেশ গঠনের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়েছে। জ্যোতিষশাস্ত্রের বাইরে গিয়েও ড. শাস্ত্রীর মানবিক উদ্যোগ দীর্ঘদিন ধরেই সমাজে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বঞ্চিত নারীদের শিক্ষা এবং স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি নিরলস কাজ করে চলেছেন।

এই আয়োজনে তাঁর উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, বাংলার নারীরা আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম। তারকাদের উপস্থিতিতে এক আলো ঝলমলে সান্ধ্য অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন বলিউড তারকা অর্জুন রামপাল এবং অভিনেতা তথা প্রযোজক আরবাজ খান। তাঁরা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং বিচারক হিসেবে উপস্থিত থেকে তিলোত্তমার এই সন্ধ্যাকে আরও গৌরবময় করে তোলেন। তাঁদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানের আভিজাত্য ও উজ্জ্বলতা এতটাই বাড়িয়ে তুলেছে যে, তা দর্শকদের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বেঙ্গল বিজনেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ এবং বাংলার সেরা তিলোত্তমা ২০২৪-২৫ শুধু ব্যবসা এবং ফ্যাশন প্রতিভার স্বীকৃতি প্রদান করেনি, বরং সমাজ পরিবর্তনের এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও বহন করেছে।
শীর্ষেন্দু নিয়োগী এবং ড. সোহিনী শাস্ত্রীর মতো সমাজের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বদের উদ্যোগে এই আয়োজনে নারীদের ক্ষমতায়নের এক শক্তিশালী বার্তা তুলে ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতের এক অগ্রগামী বাংলা গঠনের লক্ষ্যে এই আয়োজন নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।

29 Views