পার্থ মিত্র

সীমানাগুলিকে সাধারণত ভৌগোলিক সীমান্ত হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। তবে সীমানার পার্শ্ববর্তী মানুষগুলির জীবন যখন দেখা যায়, তখন সেখানে বয়ে যায় স্রোতের মতো অনেকগুলি গল্প। জন্ম নেয় অনেক স্বপ্নের, যা খুব সহজেই মিলিয়ে যায় চোরাবালির স্রোতে। আমাদের দেখাগুলিও তাই। একটার পরে একটা পরতে পরতে জীবন বয়ে যায়।তবে সীমানা পারের মানুষগুলি যারা আমার পরম আত্মীয়, তারা বলেন, বুকে সাহস নিয়ে বাঁচতে হবে ..। বয়েসে ছোট হলেও জীবনযাত্রার বয়সে তারা অনেক বড়ো। কত রকমের দায়িত্ব পালনে সক্ষম ..। তারকাটার বেড়া একাধারে বন্ধনে আবদ্ধ রাখে, আবার উন্মুক্তও রাখে তার বাহু জীবন যাত্রায়। যে কোনও দেশ, সরকার অথবা প্রশাসন যদিও খুব তৎপর থাকে এই সীমান্তবর্ত্তী এলাকা রক্ষণাবেক্ষণেরর জন্য, তবুও এপারের হাওয়া যখন বয় তা সীমানা পেরিয়ে গিয়ে লাগে ওপারের মানুষের গায়ে। ওপারের পাখির ডাকে জেগে ওঠে এপারের অলিগলি। একই জল একই মাটি শুধু মাঝে দাঁড়িয়ে থাকে কতগুলি খুঁটি। আর বাধা থাকে তার ..। আর মাঝের সব কিছুই অধিকার বিহীন …। এই সীমানা পার করলেই আমরা হয়ে যাই এক দেশের কাছে বিদেশী, কখনও বা রিফুজি, যা আজ সমস্ত বিশ্বের কাছে সব চেয়ে বড়ো সমস্যা, আবার রাজনৈতিক সুবিধাও বলা যায়।
তবে আমি এমনটা কখনো চাইনি যে, আমার জন্য সব তাই আলাদা হয়ে যাবে৷ এই যে আমি মাঝে দাঁড়িয়ে কত ঘটনার সাক্ষী হই, কত শাড়ির আঁচল, কত রক্তের দাগ, আমার বুকে তা চেপে রেখে নীরব নিশ্চল কর্তব্যে অটুট যুগযুগান্ত ধরে দাঁড়িয়ে না জানি আরো কত জীবন ..। তবে সব শেষে কাটার মুকুট মাথায় নিয়েই প্রেমের জয়গান বয়ে যাক মুখ থেকে মুখে, ঘুচে যাক দেশ কালের গন্ডি বিভেদ।

440 Views